বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন
বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম
বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদনঃ আপনি কি আপনার পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির জন্য বার্ধক্য সুবিধার জন্য আবেদন করতে চান? বৃদ্ধ বয়স ভাতার জন্য অনলাইনে কীভাবে আবেদন করতে হয়, কী প্রয়োজন, আবেদনের শর্তাবলী এবং বিশদ বিবরণ জানুন।
এখন আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনে বার্ধক্য সুবিধার জন্য আবেদন করা খুব সহজ। আবেদন যাচাইয়ের পর বরাদ্দ সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে পাওয়া যাবে। তাই এখন আপনি ঘরে বসেই বার্ধক্য সুবিধা পেতে পারেন।
বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই G2P সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্টের আবেদন গ্রহণ ও যাচাই করার পর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা সরাসরি সুবিধাভোগীর অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।
কোন বয়সে ভাতা সুবিধা প্রদান করা হয়?
বৃদ্ধ বয়সের ভর্তুকির জন্য আবেদন করার জন্য, পুরুষদের বয়স অবশ্যই 65 বছরের বেশি হতে হবে এবং মহিলাদের অবশ্যই 62 বছরের বেশি হতে হবে।
ভাতা সুবিধার জন্য যোগ্যতা এবং শর্তাবলী
বার্ধক্য সুবিধা পেতে নিম্নলিখিত শর্ত পূরণ করতে হবে:
- আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আপনাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর/জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স পুরুষদের জন্য 65 বছরের বেশি এবং মহিলাদের জন্য 62 বছরের বেশি হতে হবে। এই বয়স সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একটি নির্দিষ্ট তারিখে হতে হবে। বয়স নির্ধারণের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন এবং এসএসসি/সমমান পরীক্ষার সার্টিফিকেট অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। কোনো বিরোধ থাকলে সংশ্লিষ্ট কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
- প্রার্থীর গড় বার্ষিক আয় 10,000 (দশ হাজার) টাকার কম হতে হবে
বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা
- সরকারী কর্মচারী যদি পেনশনভোগী হয়;
- আপনি যদি একজন ভিজিডি কার্ড হোল্ডার হয়ে থাকেন একজন নারী হিসেবে;
- আপনি যদি অন্য কোনো আকারে নিয়মিত সরকারি ভর্তুকি/বরাদ্দ পান;
- যেকোনো বেসরকারি সংস্থা/সামাজিক কল্যাণ সংস্থা থেকে নিয়মিত আর্থিক অনুদান/অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণ করুন।
অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম
অনলাইনে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে, mis.bhata.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদনপত্র পূরণ করুন এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি বা পৌর কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিন। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র উপজেলা সমাজসেবা অফিস বা সমাজসেবা মাঠকর্মীর কাছে জমা দিন।
- সমাজসেবা বিভাগের সিনিয়র ভর্তুকি আবেদন ওয়েবসাইটে যান এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সহ আবেদন করুন।
- জাতীয় পরিচয় নথি নম্বর এবং জন্ম তারিখ সহ বার্ধক্য ভাতা আবেদনপত্র ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করুন।
- স্থানীয় সভাপতি, পৌর কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সমাজসেবা মাঠকর্মী বা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে পেশ করুন।
- বার্ধক্য সুবিধার জন্য অনলাইন আবেদন আপনার মোবাইল ফোন এবং আপনার কম্পিউটার উভয় থেকেই করা যেতে পারে। আবেদন করার আগে অনুগ্রহ করে পুরো নিয়মটি পড়ুন। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন এবং তারপর আবেদনটি সম্পূর্ণ করতে এই পোস্টটি আবার পর্যালোচনা করুন।
মাঝে মাঝে প্রযুক্তিগত কারণে বা সিস্টেম আপডেটের কারণে অ্যাপ ওয়েবসাইটটি ডাউন হতে পারে। “সিস্টেম উন্নয়ন কাজ অব্যাহত আছে. সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত” ওয়েবসাইটে দেখা যাবে।
এছাড়াও এই ক্ষেত্রে বৃদ্ধ বয়সের ভর্তুকি অনুরোধ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। অনুরোধ গৃহীত হলেই ওয়েবসাইটে অনুরোধ করা যাবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করার বিস্তারিত প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে নিচে বিস্তারিত দেওয়া আছে।
ধাপ 1: বয়স্ক ভাতার আবেদনের ওয়েবসাইট http://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication লিঙ্ক করুন। লিংকে ক্লিক করে গুগল ক্রোম থেকে এই সাইটে যান। নিচের ছবির মত একটি পেজ খুলবে। এখানে নির্বাচন করুন বক্সে ক্লিক করে বৃদ্ধ বয়স ভাতা বিকল্পটি নির্বাচন করুন।
ধাপ 2: প্রথম বাক্সে আবেদনকারীর NID কার্ড নম্বর লিখুন এবং দ্বিতীয় বাক্সে তার জন্ম তারিখ নির্বাচন করুন। তারপর 'Verify' বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ 3: NID কার্ডের ছবি সহ আবেদনকারীর কিছু বিবরণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ করা হবে। এখান থেকে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঠিকভাবে পূরণ না হওয়া তথ্যগুলি পূরণ করুন।
ধাপ 4: এই ধাপে, আবেদনকারী সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য প্রদান করতে হবে। তথ্য হল:
- বৈবাহিক অবস্থা
- শিক্ষাগত যোগ্যতা
- পরিবারের সদস্য সংখ্যা (পুরুষ, মহিলা ও হিজড়া)
- পেশা
- বার্ষিক আয়
- স্বাস্থ্যগত বা কর্মক্ষমতা সংক্রান্ত তথ্য
- সরকারি বা বেসরকারি আর্থিক সুবিধার তথ্য
- বাসস্থান তথ্য
- ভূমির পরিমাণ
ধাপ 5: এই ধাপে, যোগাযোগের তথ্য প্রদান করতে হবে। আবেদনকারীর বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড দ্বারা নির্বাচন করতে হবে।
এর পরে, নীচের ভর্তুকি পেতে আপনাকে সিনিয়র ভর্তুকি মোবাইল ব্যাঙ্কিং অ্যাকাউন্ট নম্বর প্রদান করতে হবে। বিকাশ/নাগদ সেটেলমেট অ্যাকাউন্ট ব্যাঙ্কের নামের ক্ষেত্রে উপস্থিত হবে। আসলে, বিকাশের জন্য আপনাকে বিকাশ অ্যাকাউন্টের সাথে একটি মোবাইল ফোন নম্বর প্রদান করতে হবে। মোবাইল নম্বরটি আপনার বা পরিবারের কোনো সদস্যের হতে হবে।
অর্থাৎ যে মোবাইল নম্বর থেকে বিকাশ বা নগদ আসবে সেই অ্যাকাউন্টটি আপনাকে দিতে হবে। অন্যথায়, আপনি একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং এটির জন্য আবেদন করতে পারেন।
মনে রাখবেন আবেদন জমা দেয়ার পর আর কোন তথ্য পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নেই।
ধাপ 6: এই ধাপে আপনাকে আবেদনের যোগ্যতা সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। নিচের ছবিটি দেখুন।
সমস্ত তথ্য পূরণ হয়ে গেলে, সমস্ত তথ্য পরীক্ষা করে দেখুন এবং তথ্যে কোনো ত্রুটি আছে কিনা। সবকিছু ঠিক থাকলে সেভ বোতামে ক্লিক করুন এবং অনুরোধ জমা দিন।
আবেদন জমা হয়ে গেলে, আপনার কাছে প্রিন্ট করার বিকল্প থাকবে। এখানে প্রিন্ট বোতামে ক্লিক করে পিডিএফ ফাইলে বার্ধক্য ভাতা আবেদনটি ডাউনলোড করুন।
আপনার নিজের প্রিন্টার না থাকলে, এলাকার যেকোনো কম্পিউটার সার্ভিস স্টোরে ফর্মটি প্রিন্ট করুন।
ধাপ 7: তারপর মুদ্রিত ফর্মের নির্দিষ্ট অংশে পৌর কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ সমাজসেবা মাঠকর্মী বা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে পাঠান।
বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদনপত্র যাচাই
বয়স্ক ভাতার আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভাতার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচন করা হবে। এ জন্য স্থানীয় কমিটি রয়েছে। আবেদন কমিটি দ্বারা পর্যালোচনা করা হয়.
বার্ধক্য ভাতা আবেদনের যাচাইকরণে বিবেচিত বিষয়গুলি হল:
জাতীয়তা: প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
বয়স: বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
স্বাস্থ্যের অবস্থা: শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থাৎ সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শীর্ষ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
আর্থিক পরিস্থিতি: দরিদ্র, উদ্বাস্তু এবং নিঃস্বদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
সামাজিক মর্যাদা: বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত মহিলা, বিধবা, সন্তানহীন এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
জমির মালিকানা: ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে, কোনও ব্যক্তি বাসস্থান ব্যতীত অন্য জমি 0.5 একর বা তার কম হলে ভূমিহীন বলে বিবেচিত হবে।
বয়স্ক ভাতা কি
বয়স্ক ভাতা একটি সরকারি আর্থিক কর্মসূচি যার মাধ্যমে বয়স্ক, অসহায়, বেকার এবং নিম্ন আয়ের লোকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
সরকারের কাছ থেকে এই আর্থিক সহায়তা পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। বয়স্ক ভাতা শুধুমাত্র মঞ্জুর করা হবে যদি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে যে আবেদনকারী আবেদন এবং নথিপত্র পরীক্ষা করার পর বয়স্ক ভাতার জন্য যোগ্য।
বাংলাদেশে বয়স্ক ভাতা চালু হয় কত সাল থেকে
বাংলাদেশে 1998 সাল থেকে বার্ধক্য ভর্তুকি চালু করা হয়। দেশের অভাবী এবং নিম্ন আয়ের প্রবীণ নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য 1997-1998 অর্থবছরে প্রথম বার্ধক্য ভর্তুকি কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল।
প্রথমত, দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ ১০ জন দরিদ্র বয়স্ক ব্যক্তিকে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে, দেশের সমস্ত পৌর ও নগর প্রতিষ্ঠানকে এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়।
শেষ কথা
সেই সময়ে আপনি বার্ধক্য সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এই তালিকা সাধারণত বছরের শুরুতে প্রস্তুত করা হয়। তাই বার্ধক্য সুবিধার আবেদনগুলি কখন গ্রহণ করা হয় সেদিকে নজর রাখুন।
নির্দিষ্ট সময়ে বয়স্ক ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করুন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ পৌরসভার সভাপতি বা কাউন্সিলরদের স্বাক্ষরসহ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আবেদন করুন।
সিনিয়র সিটিজেন ভর্তুকি জন্য আবেদন সম্পর্কে কোন প্রশ্ন? নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেখুন। উত্তর না পেলে কমেন্টে আপনার প্রশ্ন করুন।
আমার বাংলা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url