বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৬ Bangla Islamic Story 🌺 Alo 🌺 No- 06
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৬ |
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৬
আলো আস্তে করে উঠে চলে যাচ্ছিলো এমন সময় শায়লা চৌধুরী আলোর হাতটা ধরল...
|
ভোরের মাঃঃ কোথায় যাচ্ছো??
|
আলোঃঃ বাসায়। বাবা হয়তো টেনশন করছে।
|
ভোরের মাঃঃ তোমার বাবার ফোন নম্বরটা বলো তো।
|
আলোঃঃ কেন??
|
ভোরের মাঃঃ বলো বলছি?
|
আলোঃঃ ০১৭........
|
শায়লা চৌধুরী নম্বরে কল দিয়ে বাগানে চলে গেলো। আলোকে বলে গেলো সোফাতে বসতে।
আলো গিয়ে সোফায় বসে আছে ভোরের দিকে তাঁকিয়ে। ভোর সেই নিচেই তাঁকিয়ে আছে।
|
১৫মিনিট পর শায়লা চৌধুরী ভিতরে এসে...
ভোরের মাঃঃ আলো আমার সাথে উপরে আসো। ভোর তুইও আয়।
|
কেউ কিছু না বলে শায়লা চৌধুরীর পিছন পিছন গেলো।
শায়লা চৌধুরী ওনার রুমে নিয়ে গেলো। তারপর আলমারি খুলে একজোড়া বালা বের করল। বালা জোড়া নিয়ে আলোর সামনে গিয়ে...
|
ভোরের মাঃঃ আলো তোমার হাত দেখি?
|
আলোঃঃ কেন?
|
ভোরের মাঃঃ এতো কেন কেন করো কেন? দাও বলছি?
|
আলো হাতজোড়া সামনে এগিয়ে দিলো আর শায়লা চৌধুরী বালা জোড়া আলোকে পড়িয়ে দিলো..
ভোরের মাঃঃ আজ থেকপ তুমি চৌধুরী পরিবারে একমাত্র পুত্রবধূ। আমি তোমাকে আমার পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকার করলাম।
|
ভোরঃঃ মা তুমি এগুলা কি করছ? আমি ওনাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো।
|
বলেই ভোর আলোর হাত থেকে বালা জোড়া খুলতে গেলো আর সাথে সাথে শায়লা চৌধুরী ভোরের গালে এক চড় বসিয়ে দিলো.....
|
ভোরঃঃ মা তুমি আমাকে মারলে? (গালে হাত দিয়ে)
|
ভোরের মাঃঃ হ্যাঁ মেরেছি। আমার সিদ্ধান্তের উপর তুই কথা বলিস কোন সাহসে? তোর ভুলের মাশুল এটা। আলোই এই বাড়ির বৌ আজ থেকে। এটা তুইও মেনে নে।
|
ভোর আর ওখানে দাঁড়ালো না বের হয়ো গেলো ওখান থেকে। আলো নিচের দিকে তাঁকিয়ে দাড়িয়ে কাঁদছে। শায়লা চৌধুরী খেয়াল করলো। আলোকে জড়িয়ে ধরলো। আলোও শায়লা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।
|
ভোরের মাঃঃ হয়েছে আর কাঁদতে হবে না। এখন যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।
|
শায়লা চৌধুরী একটা শাড়ী আলোকে দিলো। আলো করুন কন্ঠে তাঁকিয়ে বললো...
|
আলোঃঃ আমি শাড়ী পড়তে পারি না।
|
ভোরের মাঃঃ তুমি তো শাড়ী এখনো পড়ে আছো।
|
আলোঃঃ পার্লার থেকে পড়ে আসছি
|
ভোরের মাঃঃ আচ্ছা। আমার ওয়াশরুমে যাও। আমি শাড়ী পড়িয়ে দিবো।
|
আলো শায়লা চৌধুরীর দিকে তাঁকিয়ে আছে। শায়লা চৌধুরী বলল...
ভোরের মাঃঃ কি ব্যাপার এভাবে তাঁকিয়ে আছো কেন?
|
আলোঃঃ আমার মা'ও আজ বেঁচে থাকলে হয়তো আপনার মতই হতো।😢
|
ভোরের মাঃঃ তোমার মা নেই?
|
আলোঃঃ না। সেই ছোট বেলায় ক্যান্সারে মারা গেছেন। বাবাই আমার সব।
|
ভোরের মাঃঃ ওহ আমি তোমার মা না?
|
আলোঃঃ মা???
|
ভোরের মাঃঃ হুম মা।
|
আলো সাথে সাথে শায়লা চৌধুরীকে আবার জড়িয়ে ধরে কান্না করল।
|
ভোরের মাঃঃ ইশশশ মেয়েটা কীভাবে কাঁদছে দেখো। যাও ফ্রেশ হতে যাও। তা না হলে কিন্তু মাইর দিবো।
|
আলো একটু মুচকি হেসে ওয়াশরুমে চলে গেলো। ২০মিনিট পর বের হলো। তারপর শায়লা চৌধুরী সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিলো।
|
এখন রাত ১১টা ছুঁই ছুঁই কিন্তু ভোরের কোনো খোঁজ নাই। ফোনটাও অফ। আলো কিছুক্ষণ আগে ওর বাবার সাথে প্রায় ৩০মিনিট কথা বললো। এখন আলোরও টেনশন হচ্ছে। শায়লা চৌধুরী পায়চারী করছে।
|
আলোঃঃ মা আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন। আমি জেগে আছি।
|
ভোরের মাঃঃ না মা। ও না আসলে চিন্তায় ঘুম হবে না।
|
আলোঃঃ আপনার শরীর খারাপ করবে আমি আছি তো। আপনি প্লীজ যান আর না করবে না।
|
একপ্রকার জোর করেই শায়লা চৌধুরীকে আলো পাঠিয়ে দিলো।
রাত ১টা প্রায় ভোর এখনো আসেনি। আলো অপেক্ষা করতে করতে ড্রইং রুমের সোফাতেই ঘুমিয়ে পড়েছে গুটিসুটি দিয়ে।
|
সকালে আজানের শব্দ আলোর কানে যায় আর ঘুমটাও ভেঙ্গে যায়। আলো উঠে বোঝার চেষ্টা করছে ও কোথায় আছে। সব মনে পড়তেই দৌড়ে উপরে রুমে গেলো। দেখে ভোর শুয়ে আছে বেডে। আলোর মনে শান্তি ফিরলো। আলো অজু করে নামাজ পড়ে ভোরের মাকে ডাকতে গেলো। গিয়ে দেখে শায়লা চৌধুরী নামাজ পড়ছে। দেখে আলোর ভালো লাগলো। আলো গিয়ে বেডে বসলো। ভোরের মা নামাজ শেষ করে আলোকে দেখে বসা।
|
ভোরের মাঃঃ ভোর ফিরছে?
|
আলোঃঃ হুম। কখন ফিরেছে জানি না। রুমে গিয়ে দেখি উনি ঘুম।
|
ভোরের মাঃঃ আচ্ছা মা যাও আর একটু ঘুমিয়ে নাও। তোমার শরীর এমনিতেই দুর্বল।
|
আলোঃঃ আচ্ছা মা।
|
আলো রুমে গিয়ে ভোরের পাশেই ঘুমালো।
সকাল ৮টা। আলোর ঘুম ভাঙল। এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসে যেতে হবে। তাই উঠবে কিন্তু উঠতে পারছে না কারন ভোর আলোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। আলোর খুব ভালো লাগছে। কিন্তু এতো ভালো লাগালে চলবে না। তাই....
আলোঃঃ স্যার স্যার স্যার (আস্তে করে))
|
ভোরঃঃ....................
|
আলোঃঃ স্যার স্যাররররর((চিল্লিয়ে))
|
ভোরঃঃ কি হইছে? কি হিইছে? (( ধড়ফড় করে উঠে))
|
ভোরের ধড়ফড় করে ওঠা দেখে আলোর প্রচন্ড হাসি পেলো তাই খিলখিল করে হেসে উঠলো। ভোর এবার নটিশ করলো আলো ওকে ঐভাবে ডাকলো। ভোরের খুব রাগ উঠলো.....
ভোরঃঃ ওভাবে আমাকে ডাকলেন কেন??
|
আলোঃঃ আস্তে ডেকেছিলাম আপনি শুনেন নি তাই জোরে ডাকতে বাধ্য হয়েছি।
|
ভোরঃঃ কেন ডেকেছেন? (( রাগী লুক))
|
আলোঃঃ আমি কি কোলবালিশ?? আমাকে কোলবালিশের মতো জড়িয়ে ধরেছিলেন কেন?? লজ্জা করে না?? ((বাহ আলো বাহ..মনে মনে))
|
ভোরঃঃ আপনাকে জড়িয়ে ধরেছি মানে? আর আপনি আমার বেডে কেন?
|
আলোঃঃ এটা আমারও বেড। এটা আমারও রুম।আমি এ বাড়ির পুত্রবধূ আর আপনার বৌ। ❤
|
ভোরঃঃ Bou my foot!!!
|
আলোঃঃ Bou your কলিজা। উম্মাহহহহ😘
|
ভোরকে ফ্লাইং কিস দিয়ে আলো ওয়াশরুমে চলে যায়।
শাওয়ার নিলো আলো। কিন্তু পড়লো বিপদে ওর কোনো ড্রেস তো এ বাড়ি নাই আর শাড়ীও ওর শাশুড়ির রুমে এখন কি পড়ে বের হবে আলো?
বাথ টাওয়ালটা পেঁচিয়ে বের হলো। ভোর বেডে বসে ছিলো। আলোকে এভাবে দেখে আলোর দিকে তাঁকিয়ে রইল। আলোর লজ্জা করছে কিন্তু কিছু করার নাই।
|
আলোঃঃ লুইচ্চা এভাবে তাঁকিয়ে আছেন কেন? বাথ টাওয়ালে প্রথম দেখছেন আমাকে?
|
ভোরঃঃ এভাবে আসছেন কেন? একজন পুরুষের সামনে এভাবে কেউ আসে?
|
আলোঃঃ আপনি আমার বর ওকে। আর আমার তো কোনো ড্রেস এ বাড়ি নাই আর মায়ের রুম থেকে শাড়ি নিয়ে আসতেও ভুলে গিয়েছি। এখন আমি কি পড়ব?
|
ভোরঃঃ কেন এভাবেই থাকেন।
|
আলো বেডের উপর উঠে ধুম করে ভোরের কোলে বসে পড়লো।
|
আলোঃঃ নিন ভালো করে দেখুন।
|
ভোরঃঃ আপনি আবার আমার কোলে বসেছেন? সাহঅঅ...
|
ভোর আর কিছু বলতে পারে না আলো ভোরের ঠোঁট জোড়া দখল করে বসে। কিছুক্ষণ পর...
আলোঃঃ আমাকে কিছু বললে বা মারলে আমি মাকে বলে দিবো। তখন বুঝবেন।
|
ভোরঃঃ আমি মাকে ভয় পাই না। নামুন কোল থেকে ((রাগী লুকে))
|
আলোঃঃ উহুম নামবো না। মাকে ভয় পান না ভালোবাসেন তো? তাতেই হবে। হুহ
বলেই ভোরকে জড়িয়ে ধরে।
ভোর নিজেকে ছাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে ভোর আলোকে দেখে পুরো শকড।
কারন আলো ভোরের একটা শার্ট পড়েছে। পা টা পুরো উন্মুক্ত। ভোরকে আলো দেখে..
|
আলোঃঃ আপনার শার্টে আমাকে লাগছে? যদিও ছোট হয়ে গেছে।(( ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছে।))
|
ভোরঃঃ so sexy...((আস্তে করে))
|
আলো ভোরের কথাটা শুনে এক লাফে বেডে উঠে বসে বিছানার চাদরটা টেনে নিলো।
চুপটি করে বসে রইল আলো। ভোর আলোর কাছে এসে বসলো...
ভোরঃঃ দেখতে দিন। বেড শীটটা জড়িয়ে নিলেন কেন? (( আস্তে করে))
|
আলো দিকে ভোর ঝুঁকে যাচ্ছে। সাথে সাথে আলো বললো...
আলোঃঃ স্যাররররর....
|
ভোরঃঃ কি হইছে? ((ঘোররা কেটে..উঠে দাড়ালো))
|
আলোঃঃ অফিসে যাবেন না?
|
ভোরঃঃ যাবো না তো কি করব?? আপনাকে বসে বসে দেখব??((রাগী কন্ঠে))
|
আলোঃঃ ও মা সত্যি?? প্লীজ স্যার আজ আর অফিসে যেতে হবে না। আমাকেই দেখেন। আমি ধন্য মনে করব নিজেকে। প্লীজ স্যার।
|
ভোরঃঃ স্টুপিড।
|
বলেই ভোর রেডি হতে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
আর আলো শার্টের উপর বেড শীটটা জড়িয়ে শাশুড়ি রুমে গেলো।
|
|
|
চলবে..............
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ🙂))
আমার বাংলা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url