বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৭ Bangla Islamic Story 🌺 Alo 🌺 No- 07
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৭ |
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৭
শাশুড়ির রুমে ঢুকতেই আলোকে ওভাবে দেখে শায়লা চৌধুরী হেসে দিলো। আর আলো মুখটা গোমড়া করে দাঁড়িয়ে রইল।
ভোরের মাঃঃ থাক থাক আর মন খারাপ করতে হবে না। আলমারি থেকে একটা শাড়ি বের করো তোমার পছন্দ মতো।
আলো গিয়ে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে কোনমতে পেঁচিয়ে বের হলো। তারপর শায়লা চৌধুরী সুন্দর করে পড়িয়ে দিলো। আলো খুশিতে গদগদ হয়ে শাশুড়িকে জড়িয়ে ধরলো। শাশুড়িও মুচকি হেসে আলোর কপালে একটা চুমু দিলো। তারপর বৌ শাশুড়ি মিলে নাস্তার টেবিলে গেল। নাস্তা বাহির কাজের কুসুম মেয়েটা আগেই করে রাখছে। কুসুম সকালে আসে আর রাতে চলে যায়।
এরমধ্যে ভোরও চলে আসে। আলোর ভোরের দিকে তাঁকিয়ে পুরো ফিদা হয়ে গেছে। কারন ভোরকে খুব হ্যান্ডসাম লাগছে হাল্কা ভাংগী কালারের শার্টে। 😍
ভোরের খাওয়া শেষে উঠে চলে যাচ্ছিলো...
আলোঃঃ স্যাররর
ভোরঃঃ কি? (রাগি লুক)
আলোঃঃ একটু দাড়ান।
বলেই আলো শাড়িটা একটু উঁচু করে ধরে এক দৌড়ে উপরে গিয়ে নিজের ব্যাগ আর ফোনটা নিয়ে নামলো।
আলোঃঃ চলুন স্যার এবার।
|
ভোরঃঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
|
আলোঃঃ আপনার সাথে অফিসে। মা আমি স্যারের সাথে চলে যাচ্ছি অফিসে। টাটা
|
ভোরের মাঃঃ আচ্ছা। সাবধানে যাইস তোরা।
|
ভোরঃঃ আপনাকে না গতকাল বললাম আমার অফিসে যেন না দেখি? আপনার চাকরি চলে গেছে।
|
আলোঃঃ মাআআআ(( কান্না কান্না ভাব))
|
ভোরের মাঃঃ আলোর চাকরি যায় নি। ওকে নিয়ে যা ভোর।
|
ভোর একটা বিরক্তিকর ভাব নিয়ে হাঁটা দিলো।
আলোঃঃ Thank you মা। I love you...উম্মাহ। 😘😘
ভোরের মাঃঃ পাগলি কোথাকার।((মুচকি হেসে))
আলো আর না দাঁড়িয়ে এক দৌড়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো ভোরের বসার আগে। ভোর গিয়ে ড্রাইভ সিটে বসলো।
২মিনিট হয়ে গেছে ভোর গাড়ী স্টার্ট দিচ্ছে না। তাই...
আলোঃঃ কি হলো? গাড়ী স্টার্ট দিচ্ছেন না কেন??(( বাঁকা চোখে ভোরের দিকে তাঁকিয়ে))
ভোরঃঃ আপনার সিট বেল্ট লাগাননি।((সামনের দিকে তাঁকিয়ে))
আলোঃঃ আপনি লাগিয়ে দিন। (( মনে মনে..বাহ বাহ এতো খেয়াল?))
ভোরঃঃ কেন? আপনি পারেন না?((রাগি মুডে))
আলোঃঃ পারি কিন্তু আজ থেকে লাগাবো না আর নিজের হাতে আপনি লাগিয়ে দিলে দিন তা না হলে থাক। ঝাঁকিঝুঁকি লেগে মাথা নাক মুখ ফাটুক আমার। আপনার কি?? হুহ(( ধুম মেরে গেলো))
|
ভোর অসহ্য একটা ভাব নিয়ে আলোর সিট বেল্ট লাগিয়ে দিচ্ছে। ভোরের চুলের স্মেলটা আলোকে ভোরের প্রতি টানছে।
ভোর বেল্ট লাগিয়ে দিয়ে গাড়ী স্টার্ট করলো।
|
আলোঃঃ স্যার আপনাকে একটা কিসি দিতে মন চাচ্ছে।((করুন কন্ঠে))
|
ভোরঃঃ স্টুপিড। ((রাগি মুড))
|
আলোঃঃ না মানে। আপনি সিট বেল্ট লাগিয়ে দিলেন তার পারিশ্রমিক হিসেবে দিতে চেয়েছিলাম। জানেন তো.. **শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তাকে তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও** এটা? তাই আমিও আপনার পারিশ্রমিক দিতে চেয়েছিলাম। নিলেন না। ((মুখ ভেংচি কেটে))
|
ভোরঃঃ আমি ড্রাইভ করছি। আপনার এসব ফালতু বকবক একটু অফ করলে ভালো হয়। ((রাগি মুডে))
|
আলোঃঃ আচ্ছা। ((রাগি মুডে))
|
আধা ঘণ্টার ভিতর ওরা অফিসে ঢুকলো। আলো নিজের ডেস্কে গেলো আর ভোর ওর কেবিনে গেলো।
একটু পরই মিরা ভোরের কেবিনে চলে এলো। ভোর ওর কেবিনের জানালার পাশে দাড়িয়ে ছিলো আর মিরা গিয়েও ভোরের পাশে দাঁড়ালো।
|
মিরাঃঃ কেমন আছো??
|
ভোরঃঃ গুড। তুমি?
|
মিরাঃঃ গুড। আজ কিন্তু তোমাকে সেই লাগছে। শার্টের কালারটা আমার খুব প্রিয়।
|
আলোঃঃ ও মা তাই মিরা?? শুধু শার্টের কালার প্রিয় স্যারের? স্যারকে প্রিয় না? (( খোঁচা মেরে কথাটা বললো আলো। ভোরের কেবিনে ঢুকে দেখে মিরাকে))
|
মিরাঃঃ Why not? I like him also. ((ভাব নিয়ে))
|
আলোঃঃ আজ থেকে ওনার আশেপাশে যত কম আসবেন ততই আপনার জন্য ভালো মিরা।
|
মিরাঃঃ আমি ভোরের কাছে আসব কি না? সেটা বলার তুমি কে? Who are you?
|
আলোঃঃ I'm his P.A.। এবার আপনি যেতে পারেন। কাজে মন দিন। ((মুচকি হেসে))
|
মিরাঃঃ ভোর তুমি চুপ যে? কিছু বলো?
|
আলোঃঃ মিরা আপনাকে যেতে বলেছি আমি। ((রাগি মুডে))
|
মিরা একটা রাগি ভাব নিয়ে বের হয়ে গেলো। আর ভোর পাশের সোফাতে বসে পড়লো। আলো হাতের ফাইলপত্র টেবিলে রেখে শাড়ীর আঁচলটা কোমড়ে গুঁজে টেবিলটা গুছাচ্ছে আর বলছে....
আলোঃঃ বৌ আছে তাতে হয়না? অন্য মেয়ে লাগবেই। এই মেয়েটাও খুব নির্লজ্জ। একটা পুরুষের গায়ে এতো ঘেঁষে কেন? অবিবাহিত মেয়ে হয়ে তাও। আর উনিও মজা নেয়।
|
ভোর শুধু শুনছে আর দেখছে কোনো উত্তর দেয় না। আলো টেবিলটা ঠিক করে। কফি নিয়ে আসতে চলে গেল। ভোর গিয়ে টেবিলে বসলো।
একটুপর কফির মগটা ভোরের হাতে ধরিয়ে দিলো কিন্তু সাথে আবার নিলো ভোরের হাত থেকে। নিয়ে একটা চুমুক দিলো। তারপর...
আলোঃঃ হুম ঠিক আছে নিন।
|
ভোরঃঃ আমি আপনার মুখ দেওয়াটা খাবো?
|
আলোঃঃ আমার ঠোঁট খেতে পারেন আর এটা খেতে পারবেন না?
|
ভোরঃঃ আপনি জোর করে খাওয়ান ওটা।((রাগি মুডে))
|
আলোঃঃ কোনটা??
|
ভোর আর কিছু না বলে কফিটা নিয়ে চুমুক দিলো।
|
ভোরঃঃ কফির টেস্টা আজ একটু অন্যরকম লাগছে কেন? (মনে মনে)
|
আলোঃঃ কেমন হয়েছে কফি স্যার??
|
ভোরঃঃ বাজে। ((মুখে বিরক্তিকর ছাপ))
|
আলো ধুপ করে গিয়ে ভোরের কোলে বসে পড়ে।
|
আলোঃঃ সত্যি করে বলুন কেমন হয়েছে?? তা না হলে কিন্তু চুমু দিয়ে দিবো।
|
ভোরঃঃ ভা..ভা..ভালো। উঠুন কোল থেকে। এটা অফিস।
|
আলো ভোরের কপালে একটা চুমু একেঁ দিয়ে উঠে সামনের চেয়ারে বসলো।
|
দুজনেই ফাইলপত্র চেক করছিলো। হঠাৎ ভোর টের পেলে ওর পায়ের উপর আলোর পা রেখেছে। ভোরের রাগ হলো।
|
ভোরঃঃ কি হচ্ছে এটা??
|
আলোঃঃ কোনটা??
|
ভোরঃঃ আমার পায়ের উপর আপনার পা রেখেছেন কেন?
|
আলোঃঃ মন চাইছে। এখন কি আমার পা ভেঙ্গে দিবেন? আমিও মাকে বলে দিবো।
|
ভোরঃঃ পাইছে এক মা। উফফ অসহ্য।
|
ভোর নিজেই ওর সরিয়ে নিলো। আর আলো মুখ টিপে হাসছে আর শাশুড়িকে ধন্যবাদ দিচ্ছে।
|
লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে তাই আলো লাঞ্চ নিয়ে আসার জন্য বাহিরে গেলো। আজ আর ভোরের একার লাঞ্চ না আলোরও আছে। আলো লাঞ্চ রেডি করল আর ভোর ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলো। আলোর মাথায় ভুত চাপে ভোরের হাতে খাবার জন্য। তাই ভোর নিজের মুখে ভাত দিবে তখন আলো ভোরের হাতটা টেনে নিজের মুখে পুরে নিয়ে খাবারটা খেয়ে ফেলে। ভোরের খুব রাগ হলো তাই উঠতে যাবে তখন আলো ভোরের কাঁধে হাত দিয়ে ভোরকে চেপে ধরে...
আলোঃঃ খাবার রেখে উঠতে হয় না। আর খাবো না। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন। সরি।
ভোর কিছু না বলে খেতে বসলো। লাঞ্চ শেষ করে ভোর সোফাতে শুয়ে রেস্ট নিচ্ছে আর আলো সব গুছিয়ে রেখে দিলো।
|
ভোরঃঃ আপনি লাঞ্চ করবেন না?
|
আলোঃঃ না খিদে নাই।
|
ভোরঃঃ ওহ। ওকে।
|
আর কোনো কথা না বলে আলো নিজের ডেস্কে চলে এলো ফাইলপত্র নিয়ে। বাকি টাইমটা নিজের ডেস্কেই ছিলো আলো।
|
|
|
চলবে..............
!
আমার বাংলা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url