বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব -১৬ Bangla Islamic Story 🌺 Alo 🌺 No- 16
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব -১৬ |
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব -১৬
আলো ভোরের পাশ থেকে উঠে বেলকনিতে গেলো। সোডিয়ামের বাতিগুলো জ্বলছে রাস্তায়। একদম জনমানবহীন দেখাচ্ছে যতদূর চোখ যাচ্ছে। আলো বেলকনির গ্রীলটা আঁকড়ে ধরে পিছনের কিছু কথা ভাবছে। ভাবতে ভাবতে চোখের কোণে পানি চলে এলো। না সে পানি চোখের কোণে আটকে রইল না। অঝড়ে ঝড়ছে। মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে নিজেই নিজেকে বলছে....এত বড় একটা মিথ্যা কীভাবে স্যারকে জানাবো? যেদিন স্যার জানবে ঐদিন আমাকে তার জীবনে পুরোপুরিভাবে সরিয়ে দিবে। এখন তো ভালোবাসেই না তখন তো জেনে আমাকে ঘৃণা করবে। কিন্তু আমি নিরুপায় ছিলাম। আমার আর কিছু তো করারও ছিল না। স্যার আমাকে তার জীবন থেকে সরিয়ে দিলে আমি তো মরেই যাবো। এই মিথ্যা আমি কতদিন আমার বুকের ভিতর চেপে রাখবো জানি না। এই মিথ্যা যে আমাকে প্রতিটা রাতে কুড়েকুড়ে খাচ্ছে। সব স্যারকে জানিয়ে দিবো কিন্তু এখন না যেদিন দেখব স্যারের চোখে আমার জন্য ভালোবাসা ঐদিন বলবো। কাউকে ভালোবাসলে তো তার হাজারটা অপরাধ ক্ষমা করা যায়। আমি তো একটা করেছি আমাকে কি স্যার ক্ষমা করবেন না? অবশ্যই করবে। আমি তো তার জন্যই এই অপরাধ টা করেছি। আমার স্যারের ভালোবাসা অর্জন করতেই হবে। আগে স্যারকে সুস্থ করে তুলতে হবে।
((দীর্ঘশ্বাস))
আলো আর কিছুক্ষণ বেলকনিতে থেকে তারপর ভোরের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।
১ সপ্তাহ হয়ে গেলো। আজ ভোরের মাথার সেলাই টা খুলবে আর পায়ের ব্যান্ডেজ টাও চেন্জ করবে।ডক্টর এসে পড়ছে অলরেডি। আলো ভোরের একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। ডক্টর মাথার ব্যান্ডেজ খুলে সেলাই টা খুলে দিলো। ভোরের কোনো ফিল হলো না কিন্তু আলোর যেন শরীরে সুঁইয়ের মতো বিঁধছে। আলো সহ্য করতে না পেরে ভোরের কাঁধে হাত দিয়ে চোখ বুঝে শক্ত করে চেপে ধরলো। ভোর বুঝতে পেরেছে তাই কিছু বললো না।
এরপর ভোরের পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে নতুন ব্যান্ডেজ করে দিলো। যখন ভোরের পায়ের ব্যান্ডেজ করছিলো তখন আলো রুম থেকে বের হয়ে গেলো কারন ভোরের কষ্ট মাখা মুখটা আলো দেখতে পারবে না। ডক্টরদের নিয়ে শায়লা চৌধুরী বের হলো রুম থেকে। আর আলো রুমে ঢুকলো। ডক্টর যে মলমটা দিয়ে গেলো ওটা হাতে নিয়ে ভোরের কাছে গেলো আলো তারপর কপালে একটু লাগাতেই....
ভোরঃঃ আহ....
আলোঃঃ ইশশশশশ জ্বলছে?
ভোরঃঃ হুমম....
আলোঃঃ একটু সহ্য করুন..
ভোরঃঃ থাক আর দিতে হবে না।((আলোর হাত সরিয়ে দিয়ে))
আলোঃঃ দিতে হবে না মানে? আমি কি বলছিলাম কপাল ফাটাতে? পা ভাঙ্গতে? চুপ করে বসে থাকুন একদম। জ্বলুক পুড়ুক যাই হোক সব সহ্য করতে হবে।
ভোরঃঃ আমার পা ভাঙ্গা বলে এত সাহস পাচ্ছেন তা না হলে খবর ছিলো।
আলোঃঃ ভালো যখন ছিলেন তখনই বা কি করতে পেরেছেন? ((মুখ ভেংচি দিয়ে))
ভোরঃঃ সুস্থ হই একবার তখন দেখিয়ে দিবো।
আলোঃঃ কি দেখাবেন? আপনার ভালোবাসা?((লজ্জা পাবার ভং ধরে))
ভোরঃঃ ফালতু....
আলোঃঃ ফালতু বললেন কেন? মতলব কি?((ভ্রু নাচিয়ে))
ভোরঃঃ কিসের মতলব?
আলোঃঃ আপনি যখনই ফালতু বলেন আমি জোর করে আপনাকে কিস করে বসি। তাই আপনি বেশি বেশি ফালতু বলছেন যেন আমি কিস করি। এত ভনিতা করার কি আছে? আমি আর আপনার পর না? আপনার বৌ হই যখন খুশি আদর করতেই পারেন কিন্তু বর্তমানে আপনাকে কিস দেওয়ার কোনো মুডই নাই। আমি ভাঙ্গা লোককে চুমু খাই না। ((মুখ ভেংচি দিয়ে))
ভোরঃঃ উফ আস্ত একটা আজাইরা মেয়ে।
আলোঃঃ হয় হয় এমনটাই হয়। যখন মন কিছু চায় আর আমরা যদি সেটা না পাই তখন এমন মেজাজ ই হয়। তবুও আমাদের মানিয়ে নিতে হয়।
ভোরঃঃ Get lost...
আলোঃঃ দেখছেন? আপনার কত রাগ উঠছে?
ভোরঃঃ তুলে এক আছার মারব কিন্তু?
আলোঃঃ আপনার পা ভাঙ্গা।((হাসি দিয়ে))
ভোর আর কথা না বলে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
একটু পরই ভোরের ফিল হলো ওর ঠোঁট কেউ স্পর্শ করছে তাই চোখ খুলতেই দেখে আলো ওর ঠোঁট দিয়ে ভোরের ঠোঁট জোড়া দখল করে আছে। ভোরেরও কেন যেন ছাড়তে মন চাচ্ছে না তাই ভোরও রেসপন্স করল।
কিছুক্ষণ পর আলো ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে একটু দূর গিয়েই দাঁড়ালো।ভোরের দিকে না ফিরে বললো.......
আলোঃঃ ধন্যবাদ রেসপন্স করার জন্য।(( লজ্জা মাখা মুখে))
বলেই আলো নিচে চলে গেলো আর ভোরের অজান্তেই ভোরের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল।
আলো ভোরের জন্য কফি নিয়ে এলো। কফিটা দিয়ে চলে গেলো রান্না করতে। রান্না শেষ করে এসে ভোরকে চেন্জ করালো তারপর খাইয়ে দিলো। এরপর আলো ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলো। ওয়াশরুম থেকে বের হলো।
ভোর আলোর দিকে তাঁকিয়ে বললো....
ভোরঃঃ আপনার জামাটা অনেক টাইট। তাই...
আলোঃঃ তাই???
ভোরঃঃ তাই ওড়ানাটা পড়ুন।
আলোঃঃ রুমের মধ্যে ওড়না পড়ে নিজেকে অসহ্য ভাবার মানেই হয় না। দেখতে মন না চাইলে চোখ বন্ধ করে রাখুন। জামাটা টাইট হয়ে গিয়েছে এখানে আমার হাত আছে? নাই। আর আপনি তো টাইটফিট ড্রেসে মিরাকে দেখতেন আর ব্লাশিং হতেন।
ভোরঃঃ ধুর যা খুশি পড়ুন তো। সব ভাঙ্গিয়ে বলতে হবে যত্তসব।
আলোঃঃ আপনার বৌ যত্তসব।
ভোরঃঃ আমার বৌ তো আপনিই।
আলোঃঃ সত্যি??? ((একগাল হাসি নিয়ে))
ভোরঃঃ আপনি বলেন তাই বললাম। ওকে?
আলোঃঃ হুম ওকে।
আলো নিচে গিয়ে লাঞ্চ করলো। এরপর রুমে এসে শুয়ে পড়ল। ভোরও ঘুমিয়ে পড়ল।
এভাবেই খুনসুটির মধ্যে দিয়ে দিনগুলো যাচ্ছিলো। আস্তে আস্তে ভোরের কপালের দাগটা মুছে যাচ্ছে। আলোর সেবায় যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হচ্ছে। ডক্টররা এসে এসে চেক করে আর আলোকে ধন্যবাদ দিয়ে যায়। ভোরও আলোর প্রতি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ছে। পড়বেই না কেন? মেয়েটা যে ওকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসে। আলোর সেবাই তো ভোর এখন একটু একটু হাটতে পারে আলোর কাঁধে ভর দিয়ে। মেয়েটার কথা এখন ভোরের মাথায় ভালোই ঘুরপাক খাচ্ছে। না খেয়ে যাবে কোথায়? জোর করে ভোরের মাথায় নিজেকে ঝিঁকে বসিয়ে দিচ্ছে।
এখন ভোরকে ওয়াশরুমে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে গোসলের জন্য আলো। ওয়াশরুমে ঢুকে...
ভোরঃঃ ওকে আপনি তবে বের যান। আমার গোসল শেষ হলে ডেকে নিবো।
আলোঃঃ কেন বের হবো? আর আমার সামনে তো আজ নতুন গোসল করবেন না তাই না? তবে সমস্যা কি? আজ আমিও আপনার সাথে গোসল করব।
বলেই ওয়াশরুমের দরজা লক করে শাওয়ার ছেড়ে দিলো আলো।
ভোরঃঃ আহ কি করছেন? পানি ছিটাছিটি করছেন কেন? আপনি বেরিয়ে যান। নির্লজ্জ মেয়ে একটা।
আলোঃঃ বরের সামনে গোসল করলে নির্লজ্জ হয় না। হুহ।
বলেই আলো ভোরের টি-শার্ট খুলে দিলো। তারপর বডিওয়াশ লাগিয়ে দিলো।
আলোঃঃ দেখছেন আপনাকে আমি কত সুন্দর করে গোসল করিয়ে দিচ্ছি। আপনি একটা ধন্যবাদ ও দিচ্ছেন না। ((মনটা খারাপ করে))
ভোরঃঃ একটু দূরে সরে দাড়ান আমার থেকে।
আলোঃঃ কেন? ((ভ্রু ভাঁজ করে))
ভোরঃঃ বোঝেন না নাকি? আমি পুরুষ তার উপরে আপনি ভিজে শরীরে আমার এতো কাছে। সব কিছু এত এক্সপ্লেইন করা সম্ভব না।
আলোঃঃ আমাকে দেখে আপনার যে ফিল আসে এটা একটু হাস্যকর। আপনার ফিল আসে মিরাকে দেখলে আমাকে না। ((একটা ছোট মুচকি হাসি দিয়ে)) নিন চেন্জ করে নিন আমি ঘুরে দাঁড়াচ্ছি।
বলেই আলো ঘুরে দাঁড়ালো আর ভোর সাথে সাথে আলোকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে...
ভোরঃঃ আমার মিরাকে দেখলে শুধু ফিল আসে?(( রাগী কন্ঠে))
আলোঃঃ হুম। ছাড়ুন...
ভোরঃঃ মিরাকে নিয়ে বাজে চিন্তা কেন আসে?? ((আরও শক্ত করে চেপে ধরে))
আলোঃঃ বাজে চিন্তা না। আপনার ফিল আসে বলেই বলছি। ছাড়ুন লাআআআগগ.....
আর বলতে পারলো না তার আগেই ভোর আলোর ঠোঁট জোড়া দখল করে নিলো। রাগে নিয়ে কিস করছে কিন্তু তা কামড়ে পরিনত হচ্ছে আর আলো ব্যথা পাচ্ছে তাই বার বার ভোরকে ধাক্কা দিচ্ছে কিন্তু ভোরের রাগ আর শক্তির কাছে আলো পেরে উঠছে না।
ভোর কামড়াতে কামড়াতে একটা সময় ভালোবাসার সাথে কিস করে ভরিয়ে দিচ্ছি আর আলোও রেসপন্স করছে। ভোর যখন আলোর কোমড়ে বার বার স্লাইড করছে আলো কেঁপে কেঁপে উঠছে।
ভোর আলোর ঠোঁট ছেড়ে ঘাড়ে পাগলের মতো চুমু খাচ্ছে। আলোও যেন হারিয়ে যাচ্ছে।
আলো ভোরের এ স্পর্শ সহ্য করতে না পেরে ভোরের পিঠে আঁচড় কাটছে নখ দিয়ে। এরমধ্যে আলোর হাত শাওয়ারের ট্যাপে পড়ে আর পানি ভোরের শরীরে পড়তেই ভোর নিজের হুস ফিরে পায়। আর আলোকে আস্তে করে ছেড়ে দেয়। আলো ভোরের দিকে না তাকিয়ে ঘুরে দাড়ায়।
ভোরঃঃ নেক্সট টাইম মিরা মিরা করলে এর থেকে খারাপ হবে। আমাকে রুমে দিয়ে আসুন।
আলো নিচের দিকে তাঁকিয়েই ঘুরে ভোরের শরীর মুছে রুমে দিয়ে এসে ওয়াশরুমে আসে চেন্জ করার জন্য। আর ভোর আলোকে এতো লজ্জা পেতে দেখে মনে মনে বলে... ইশশশশশশশশ ওনার দেখি লজ্জাও আছে? তবে লজ্জা পেলে খারাপ লাগে না বেশ মিষ্টিই লাগে।(( মুচকি হেসে))।
চলবে....................
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।পরবর্তী পর্ব পেতে সাথে থাকুন।ধন্যবাদ 🙂))
আমার বাংলা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url