amarbangla

বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৮ Bangla Valobasar Golpo - Tor Asokto - 08

 

বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৮
বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৮

বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛

  • ✔️গল্পের নামঃ   💛 তোর আসক্ত 💛
  • ✔️লেখকঃ           শিফা আফরিন মিম
  • ✔️সংগৃহীতঃ       ফেছবুক থেকে 

💛 তোর আসক্ত 💛 গল্পের সকল পর্ব সমূহের তালিকা নিচে দেখানো হচ্ছে । গল্পটি কারো যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার প্রিয় জনের কাছে শেয়ার করে তাকেও এই 💛 তোর আসক্ত 💛 গল্পটি পড়ার সুযোগ করে দিবেন । 

🔴 বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৮  

আয়ান - তাহলে এখন গুছানোর কথা বলছো কেনো? সকালে পারবে না গুছাতে? 

রুপসা - হ্যা। (মাথা নাড়িয়ে) 

আয়ান আর কিছু বলে না রুপসাও চুপচাপ থাকে। আয়ানের কথা অনুযায়ী কাল সকালেই গুছাবে বলে ঠিক করে। 

সকালে...

রুপসা উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনে চলে আসে। আগের দিনের মতো আজও রুপসা সবার আগেই উঠে। 

সবার জন্য ব্রেকফাস্ট বানিয়ে টেবিলে সাজিয়ে রাখে। 

কিছুক্ষন পরই আয়ান, আমান সহ সবাই চলে আসে। 

আয়ানের বাবা - মা (রুপসাকে) সব গুছিয়ে রেখেছো তো?

রুপসা আয়ানের বাবার কথা শুনে অসহায় ভাবে আয়ানের দিকে তাকায়। মিথ্যা বলতে তার মন সাই দিচ্ছে না। তাই সত্যি টাই বলে দেয়। 

রুপসা - না বাবা এখনো হয়নি। তবে করে নিবো।

আয়ানের বাবা - হ্যা এখনি করে নিও। নয়তো পরে কিছু ফেলে যাবে ভুলে। 

রুপসা - ঠিক আছে বাবা। 

আমান - ভাবি তোমার বাসার এডড্রেস টা দাও তো।

আমানের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে আমানের দিকে তাকায়। 

আয়ানের মা - কিরে তুই তো বললি আজ ওদের সাথে যাবি। তাহলে এডড্রেস নিয়ে আবার কি করবি শুনি? আজ গেলেই তো দেখতে পারবি তাইনা? 

আমান - ওহো না মা আসলে হয়েছে কি জানো আমি ভাইয়ার বাইক টা নিয়ে আগে চলে যাবো। তারপর না হয় ভাইয়া আর ভাবি এক সাথে গাড়িতে করে যাবে। 

আয়ান - কেনো? তুই আমাদের সাথে গেলে প্রবলেম টা কোথায় সেটাই তো বুঝতে পারছি না। 

আমান - (আছে মেরি ব্রাদার আছে! আমি তোমাদের সাথে গিয়ে তোমাদের প্রাইভেসি টা নষ্ট করবো নাকি হুহহহ....মনে মনে)

না ভাইয়া এমনিই আমার গাড়িতে করে সমস্যা হই। 

আয়ান - কী সমস্যা শুনি? 

আমান - ও তুমি বুঝবে না। থাক বাদ দাও৷ ভাবি তুমি আমাকে এডড্রেস টা দিও কিন্তু কেমন? 

রুপসা - আচ্ছা ভাই দিবো। 

ব্রেকফাস্ট শেষ করে রুপসা রুমে গিয়ে গুছিয়ে নেয়। 

দুপুরের দিকে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়। রুপসা গতকালের কেনা শাড়িটা পড়েছে। তবে তার উপরে অবশ্য বোরখা ও পড়েছে। কারন সে চায় না আয়ান কোনো ভাবে তাকে খারাপ ভাবুক। সে সব সময়ই আয়ানের কাছে ভালো হয়ে থাকতে চায়।আয়ানের পছন্দ মতোই চলতে চায়। 

আয়ান রুমে এসে দেখে রুপসা নিকাব বাঁধছে। আয়ান কিছুটা অবাক হয়ে যায়। হয়েছে টা কী এই মেয়েটার। কোথাও বের হলে একদিন শাড়ি পড়ে তো একদিন বোরখা! 

রুপসা - আপনি রেডি তো? 

আয়ান - হ্যা। তুমি কি এই ভাবেই যাবে নাকি? 

রুপসা - কেনো কোনো সমস্যা? 

আয়ান - না সমস্যা হতে যাবে কেনো। ইট'স ওকে। 

রুপসা - হুম চলুন। ভাই বোধহয় এতোখনে বেড়িয়ে পড়েছে। আমরাও এগোই। 

রুপসা আর আয়ান তার দুজনই আয়ানের বাবা মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। 

আয়ান ড্রইভিং সীটে বসে, পাশের সীটে রুপসা। 

অবাক হওয়ার মতো কান্ঠ.... রুপসা আজ সীটে বসেই কত সুন্দর করে সীটবেল্ট টা বেঁধে নিলো। এটা কীভাবে সম্ভব? কাল তো রুপসা বলেছিলো সে সীটবেল্ট বাঁধতে পারে না৷ আর আমি যখন লাগিয়ে দিয়েছিলাম তখন ত ও খেয়াল ও করেনি! তাহলে আজ কিভাবে বাধলো?

আয়ান কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে রুপসার দিকে তাকিয়ে থাকে। রুপসা আয়ানের দিকে তাকিয়ে ইশারায় প্রশ্ন করে কী হয়েছে। আয়ান মাথা নাড়িয়ে কিছুনা বুঝায়৷ তারপর গাড়ি স্টার্ট দেয়। 

কিছুদূর অতিক্রম হওয়ার পরই আয়ান রুপসাকে প্রশ্ন করে...

আয়ান - একটা কথা বলো তো.... আজ এই পোষাকে বের হলে তো কাল শাড়ি পড়ে কেনো গিয়েছিলে শপিংমলে? নিজের বাড়িতে যাচ্ছো এতো সুন্দর করে আর শপিংমলে এতো এতো মানুষ তুমি শাড়ি পড়ে কেনো গেলে? (কিছুটা রেগে)

রুপসা - আজকেও তো শাড়ি পড়েই আসতাম। কিন্তু আপনি যেহেতু পছন্দ করেন না তাই আরকি। (মুচকি হেসে)

আয়ান - (বাহহ আমার পছন্দ ও গুরুত্ব দেয় দেখছি! এই সব জানা আছে। কয়েক দিন গেলেই সব গুরুত্ব শেষ!..... মনে মনে)

রুপসা - কী হলো চুপ যে? 

আয়ান - না এমনিই। 

আয়ান চুপ করে যায় সাথে রুপসাও বাকি পথ টা আর কেউই কোনো কথা বলে না। 

হটাৎ দরজায় বেল বাজার শব্দ শুনে রুপসার মা বলে..... 

রুপসার মা - রাইসা দেখ তো কে এসেছে।

(রাইসা রুপসার ছোট বোন।) 

রাইসা - আর কে মা নিশ্চয় আপুরা চলে এসেছে। (খুশি হয়ে)

রাইসা দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে শকড খায়.... 

দরজার সামনে একটা ছেলে দাড়ানো। ফর্সা গায়ের রং তার মধ্যে আবার এ্যাশ  কালার শার্ট, ব্ল্যাক কালার জিন্স, কালো সানগ্লাস টা বুকে আটকে রেখেছে। চুল গুলো সিল্কি! 

কিন্তু এই সুদর্শন পুরুষ টা কে সেটাই মনে মনে ভাবছে রাইসা। 

হটাৎ ছেলেটার হাতের তুরিতে ধ্যান আসে রাইসার। 

রাইসা - কাকে চাই? 

ছেলেটা - আপাতত তোমাকে! 

ছেলেটার কথা শুনে রাইসার চোখ দু'টো বড় বড় হয়ে যায়। অবাক করা চোখে ছেলেটার দিকে তাকায় সে। মুখে তার বিরক্তির ছাপ পাশাপাশি রাগও আছে। ইচ্ছে করে ওরাধুরা ধুলাই করতে ছেলেটাকে। 

রাইসা - ফাইজলামি করছেন কেনো আপনি?  কে আপনি? কোথথেকে এসেছেন বলুন? 

ছেলেটা - আরেহহ আপনি কি সামান্য আপ্যায়ন টুকুও জানেন না নাকি? কখন থেকে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি ভেতরে আসতেও বলছেন না বাহিরে দাঁড় করিয়ে রেখেই প্রশ্ন করা শুরু করে দিলেন। 

এর মধ্যের রুপসার মা চলে আসে। 

রুপসার মা - কিরে রাইসা তুই কার সাথে ঝগড়া করছিস? তোর এই একটা স্বভাব জানিস তো! যেখানেই যাবি ঝগড়া না বাঁধিয়ে তোর শান্তি নেই। 

রাইসা - ওফ মা আমি কী করলাম। দেখো না এই লোক টা কোথ থেকে এসে কী না কী বলেই যাচ্ছে। 

রুপসার মা দরজার সামনে আসতেই ছেলেটা রুপসার মাকে সালাম দেয়। 

ছেলেটা - আসসালামু আলাইকুম আন্টি। 

রুপসার মা - ওয়ালাইকুম আসসালাম। তুমি কে বাবা? 

ছেলেটা - আন্টি আমি আয়ানের বড় ভাই। আই মিন রুপসা ভাবির দেবর। 

রুপসার মা - ওওও মা দেখেছো! আসলে তুমি বিয়েতে বোধহয় আসোনি তাই চিনতে পারছিলাম না। ভেতরে আসো বাবা। 

রাইসা আমানের কথা শুনে টাস্কি! 

রুপসার মা - রাইসা তুইও না। এভাবে ছেলেটাকে বাহিরে দাড় করিয়ে রাখলি কেনো? 

রাইসা - তো কী করবো? চিনি না জানিনা উনাকে কি মাথায় নিয়ে নাচবো? আগে বললেই হতো আপুর দেবর। 

রুপসার মা - তুই যা তো। উর জন্য আগে শরবত বানিয়ে আন যা। 

রাইসা - যাচ্ছি। 

রুপসার মা - বাবা তুমি একা আসলে যে? রুপসা আর আয়ান বাবা তো..... 

আমান - আন্টি আমি আসলে ভাবির কাছ থেকে আপনাদের বাসার ঠিকানা নিয়ে বাইকে করে চলে এসেছি একাই। ভাইয়া আর ভাবি আসছে বোধহয়। 

রুপসার মা - ওওও ঠিক আছে ঠিক আছে তুমি বসো তাহলে। 

রাইসা কিচেনে এসে আমানের জন্য শরবত বানাচ্ছে আর মনে মনে আমান কে হাজার টা অদ্ভুত বকা দিয়েই যাচ্ছে। 

রাইসা - ইচ্ছে করছে এই ব্যাটার শরবতে ১০০ চামচ মরিচ মিশিয়ে দিই। অসভ্য ফাজিল লোক কোথাকার! এসে পরিচয় না দিলে চিনবো কি করে? এতে কী আমার দোষ? 

এই ব্যাটার জন্য মায়ের কাছ থেকে বকা শুনতে হইছে হুহহহ। 

রাইসা শরবত বানিয়ে নিজেই আমানের কাছে নিয়ে যায়। গিয়ে দেখে তার মা নেই। 

রাইসা - ও বাবা...! মা কই গেলো? এখানেই তো ছিলো। তাহলে? এই ব্যাটার সামনে গেলেই রাগ উঠবে আবার ভয়ও করছে। কি করি ধুররর! 

রাইসা শরবত টা আমানের সামনে রাখে আমান একটা মুচকি হাসি দিয়ে শরবত টা হাতে নেয়। এক চুমুক খেয়েই বলে উঠে.... 

আমান - শরবত টা কিন্তু তোমার মতোই মিষ্টি!! (বাঁকা হেসে)

আমানের কথা শুনে রাইসা তেলেভাজা বেগুন হয়ে যায়। ইচ্ছে করছে এই ছেলেটারে দিয়ে ফুটবল খেলতে। শরবত তো মিষ্টিই হবে। এটা আবার বলার কী আছে শুনি। 

ওফফফ.... মরিচ দিলেই ভালো হতো ঝাল শরবত খেতে চেয়েছিলো বোধহয় যত্তসব! (মনে মনে)

রাইসা কিছু না বলেই ভেংচি কেটে চলে আসে সেখান থেকে। আমান রাইসার ভেংচি কাটা দেখে হেসে দেয়। 

কিছুক্ষণ পরই রুপসা আর আয়ান ও চলে আসে। রাইসা তো মহা খুশি তার বোন কে পেয়ে। 

রাইসা - ওফফ! আপু তুমি এসেছো। জানো আমার পেটের ভেতর কত কথা ঘুর ঘুর করছে?তোমাকে না বলা অব্দি শান্তিই পাবো না গো। 

রুপসা - আচ্ছা বাবা শুনবো সব কথাই শুনবো! 

সবাই ফ্রেশ হয়ে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নেয়। রুপসা বেচারি অনেক ক্লান্ত। খেয়েই নিজের রুমে গিয়ে ধপাস করে শুয়ে ঘুম দেয়। 

আয়ান কিছুক্ষণ নিচে থেকে তারপর রুমে আসে। 

রুমে এসে আয়ান পুরো রুমটা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। 

খুব সাজানো গুছানো রুমটা। দেখেই বোঝা যায় রুপসা এলোমেলো কিছু পছন্দ করে না। 

আয়ান আরও অবাক হয় রুপসাকে দেখে। কিরকম বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়েছে!  চুল গুলোও চোখে মুখে পড়ে আছে। আয়ান আচমকাই রুপসার মাথার কাছে বসে হাত দিয়ে রুপসার এলোমেলো চুল গুলো ঠিক করে দেয়৷ 

রুপসা একটু নড়েচড়ে উঠলেই আয়ান সেখান থেকে উঠে বেলকনিতে চলে আসে। 

বেলকনি টাও অনেক সুন্দর। বিশেষ করে নানান রংয়ের ফুল গুলো সুন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। 

রাতে....

সবাই একসাথে ডিনার করতে বসে। রুপসা ডিনার শেষে সোজা রাইসার রুমে চলে আসে। 

রাইসা - আপু আজ কিন্তু আমার ঘরেই থাকবে কেমন? অনেক কথা জমে আছে তোমার জন্য। 

রুপসা - আচ্ছা থাকবো। এখন এদিকে এসে বস। 

রাইসা এসে রুপসার পাশে বসে। 

রাইসা - জানো আপু তোমার দেবর টা না একটা বাদর। 

রুপসা - মানে? (ভ্রু কুঁচকে)

রাইসা - মানে ঐ ছেলে টা আস্ত একটা বেয়াদব। জানো, ও এসেই মার কাছ থেকে আমাকে কত্তো গুলো বকা খাইয়েছে! (অভিমান করে)

রুপসা - কি করেছে ও? 

রাইসা রুপসাকে সবটা বলে। রুপসা শুনে তো হাসতে হাসতে গরাগরি খাওয়ার অবস্থা। 

রাইসা - তুমি হাসছো হুহহ। ঐ বাদর টাকে কে বলেছে আমাদের বাড়ি আসতে? 

রুপসা - আহহ রাইসা। ও আমাদের গেস্ট। তুই এরকম করে কথা বলছিস কেনো? 

রাইসা অসহায় মুখ করে রুপসার দিকে তাকায়। 

চলবে...


 সকল পর্ব এর তালিকা ঃ 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমার বাংলা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
amarbangla
amarbangla
Our Telegram Group / Channel Join Now
Our Facebook Page Follow Now
amarbangla
daraz