বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ শেষ Bangla Valobasar Golpo - Tor Asokto - end
বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ শেষ |
বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛
- ✔️গল্পের নামঃ 💛 তোর আসক্ত 💛
- ✔️লেখকঃ শিফা আফরিন মিম
- ✔️সংগৃহীতঃ ফেছবুক থেকে
💛 তোর আসক্ত 💛 গল্পের সকল পর্ব সমূহের তালিকা নিচে দেখানো হচ্ছে । গল্পটি কারো যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার প্রিয় জনের কাছে শেয়ার করে তাকেও এই 💛 তোর আসক্ত 💛 গল্পটি পড়ার সুযোগ করে দিবেন ।
🔴 বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ শেষ
রুপসা একাই বাড়ি চলে আসে। রুমে ঢুকতেই দেখে আয়ান।
রুপসা - আপনি চলে এসেছেন?
হটাৎ কারো কন্ঠ শুনে পেছনে ফিরে তাকায় আয়ান।
আয়ান - হ্যাঁ মাত্রই আসলাম। তুমি কি একা এসেছো নাকি?
রুপসা - হ্যাঁ।
আয়ান - আমান কে বললেই হতো। ও গিয়ে নিয়ে আসতো। তাছাড়া আমাকেও ওতো ফোন দিতে পারতে।
রুপসা - আরে প্রবলেব নেই।
আয়ান - আমান আর রাইসার ব্যাপার টা কী হলো?
রুপসা - আমি বাবা মাকে বলেছি। উনারা রাজি হয়েছে। এখন শুধু রাইসা আর বাবা মা (আয়ানের বাবা মা) বাকি।
আয়ান - তাহলে তো শুভ কাজে দেরি করে লাভ নেই। (চোখ মেরে)
রুপসা - মানে? আপনি কি বাবা মাকে না জানিয়েই বিয়ে শুরু করে দিবেন নাকি?
আয়ান - কোনো কাজ ফেলে রেখে শান্তি পাইনা বুঝলে। আমি অনেকখন হলো আসলাম এসেই বাবা মাকে সব বলেছি। মা বাবা অমত করেনি।
রুপসা - সত্যিইই...!
আয়ান - হুম।
কিছুক্ষণ পর....
রুপসা তার শাশুরির রুমে যায়।
রুপসা - মা আসবো?
আয়ানের মা - হ্যাঁ আয়। কখন এলি?
রুপসা - এইতো কিছুক্ষণ হলো।
আয়ানের মা - আয়ান আমাকে ওদের বিয়ের বিষয়ে বলেছিলো। তুই রাজি তো?
রুপসা - হ্যাঁ মা। আপনারা যা বলবেন তাই হবে মা বাবা আপনারা সবাই রাজি ব্যাস আমার তো রাজি না হওয়ার কোনো কারনই নেই।
আয়ানের মা - আচ্ছা তাহলে আর দেরি করে লাভ নেই। এমনিতেও তো আমানের বেশি দিন নেই। পরে তে চলে যেতে হবে।
রাতে...
আয়ান অনেকক্ষন যাবৎ ওয়েট করছে এদিকে রুপসার আসার কোনো নাম গন্ধ ও নেই।
যেই না আয়ান রুম থেকে বের হতে যাবে অমনি রুপসা রুমে ঢুকে।
রুপসা - কোথাও যাচ্ছিলেন?
আয়ান - না। এতোখন কোথায় ছিলে?
রুপসা - ঐ তো নিচে। কেনো আপনার কিছু লাগবে?
আয়ান - না। ঘুমাবে কখন এতো রাত হয়ে গেলো তাই আরকি।
রুপসা - ওহহ আচ্ছা। রুপসা আয়ানের কাছ থেকে গিয়ে নিজের চাদর টা আর বালিশ টা হাতে নেয়। (আয়ানকে রাগানের জন্য)
আয়ান - এসব নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
রুপসা - ও মা কেনো? আমি কি ঘুমাবো না নাকি?
আয়ান - তোমাকে কি ঘুমাতে বারন করেছি? (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুপসা - না তো। আমি তো বেলকনিতে থাকি তাই আরকি।
আয়ান ঝড়ের গতিতে রুপসার কাছে গিয়ে চাদর টা আর বালিশ টা টান মেরে নিয়ে নেয়।
রুপসা মুখ টিপে হাসছে।
আয়ান - তোমাকে বলেছি বেলকনিতে গিয়ে থাকতে?
রুপসা - ও মা! বলেন নি?
আয়ান - রুপ.... বেশি বারাবারি করো না বলে দিলাম। (ধমক দিয়ে)
রুপসা - ঘুমাবেন চলুন।
রুপসা চাদর টা আর বালিশ টা নিয়ে এক কোণে শুয়ে পড়ে।
আয়ান ও কিছুক্ষণ পর এসে রুপসার পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে...
রুপসা আর আয়ান শপিং এ যায় আমান আর রাইসার বিয়ের কেনাকাটা করতে। এখন আমান পুরোটাই পালটে গেছে। এখন আর আগের মতে রুপসাকে বের হতে বলে না, রাগ দেখায় না।
দুই দিন পর....
রুপসা - কোথায় গেলেন...? (কিছুটা জোরে)
আয়ান - আরে কি হয়েছে ডাকা ডাকি করছো কেনো?
রুপসা - কি হয়েছে দেখতে পারছেন না?
আয়ান - না। বলো কি হয়েছে।
রুপসা - (নিজের দু'হাত আয়ানের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে) দেখুন
আয়ান - বাহহ মেহেদীর ডিজাইন টা তো বেশ! তোমার হাতে মানিয়েছে।
রুপসা আয়ানের কথা শুনে রাগে ফুসতে থাকে।
রুপসা - আপনাকে ডিজাইন দেখতে বলিনি। বলেছি মেহেদী পড়েছি তাই আপাতত আমার দুই খানা হাতই বিজি আছে।
আয়ান - হ্যাঁ। তো?
রুপসা - তো মানে? দেখতে পারছেন না চুল গুলো কিরকম বিরক্ত করছে। বেধে দিন।
আয়ান এতো খনে খেয়াল করেনি রুপসার কপালের দিকের ছোট ছোট চুল গুলো বার বার নাকে মুখে এসে বারি খাচ্ছে।
আয়ান রুপসার কাছে বসে কিছুক্ষণ রুপসার দিকে তাকিয়ে থাকে।
রুপসা - হহা করে তাকিয়ে না থেকে একটু সাহায্য ওতো করতে পারেন তাইনা?
আয়ান মুচকি হেসে চুল গুলো রুপসার কানের পিছে গুজে দেয়।
রুপসা - থ্যাংকস। (ভাব নিয়ে)
আয়ান - আহারে আসছে আমায় ধন্যবাদ দিতে!
রুপসা আয়ানের কথা শুনে হেসে দেয়।
আয়ান - রুপ তোমার জন্যই সবটা সম্ভব হলো। তুমি যদি বাবা মাকে বুঝিয়ে না বলতে তাহলে হয়তো আর আমানের বিয়েটা সম্ভব হতো না।
আচ্ছা রাইসা কে রাজি করালো কে?
রুপসা - রাজি করানোর কি আছে! বেচারি তো আগে থেকেই ভাইয়ের প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে যাচ্ছে। বাবা মা বলাতে আর না করেনি। মাথা নিচু করে ছিলো। বোধহয় লজ্জায় কিছু বলেনি।
আয়ান - হ্যাঁ। তাই হবে। ভাগ্যিস আমার শালিকা রাজি হয়েছিলো!
রুপসা - আরে রাখেন তো এই সব কথা। আমি তো বড় সর চিন্তায় পড়ে গেলাম!
আয়ান - কিসের চিন্তা? (ভ্রু কুঁচকে)
রুপসা - ঐযে... আমি এখন কোন পক্ষের?
আয়ান - মানে?
রুপসা - আরে বুঝতে পারছেন না? ছেলেপক্ষের ভাবি আবার মেয়ে পক্ষের বড় বোন। এখন কোন পক্ষে যাবো? (অসহায় ভাবে)
আয়ান রুপসার কথা শুনে হেঁসে দেয়।
আয়ান - রুপ তুমি পারো ও বটে! দুই পক্ষেই যেও কেমন!
রুপসা - ধুরর! সেটা আবার হয় নাকি?
আয়ান - হয় গো হয়। আচ্ছা এখন মেহেদী তুলে রেডি হয়ে নাও ঝটপট।
রুপসা - হ্যাঁ শুকিয়ে গেছে। যাচ্ছি।
পরের দিন..
রাইসা কে পার্লারের মেয়েরা সাজিয়ে দিয়ে গেছে।
অন্য মেয়ে হলে হয়তো মন খারাপ করে বসে থাকতো কিন্তু রাইসার ক্ষেত্রে উল্টো। কারন সে তার বোনের সাথে থাকতে পারবে ভাবলেই খুশিখুশি লাগছে। আবার মা বাবার জন্য কষ্ট ও হচ্ছে।
বিয়ে শুরু হলে... রাইসা কে কবুল বলতে বলা হলে বেচারি চুপ করে থাকে। বার বার বলার পরও মুখ বন্ধ রেখেছে। এদিকে আমান কিছু বলতে না পারলে ভেতর ভেতর রাগে ফুসছে।
আমান - ইশশ ঢং দেখো! চুপ করে বসে আছে! আরে তারাতারি কবুল টা বলে দিলে কি হয় শুনি! হুদাই টাইম নষ্ট করতেছে উফফফ! (মনে মনে)
রাইসা কবুল বলে। আমান কে বলতে বলা হলে গরগর করে বলে দেয় যেনো সে এটার জন্যই অপেক্ষা করে ছিলো।
বিয়ে শেষ হলে রাইসা কে আমান দের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
আমানের কাজিন রা মিলে রাইসা কে আমানের ঘরে নিয়ে যায়।
রুপসা - ফ্রেশ হয়ে ঘুমাবেন চলুন। (আয়ানকে উদ্দেশ্য করে)
আয়ান - হুম চলো।
রুপসা আর আয়ান রুমের দরজা খুলে ভেতরে আসতেই দেখে রুম টা অন্ধকার। রুপসা ধীরে ধীরে গিয়ে লাইট টা অন করতেই চমকে উঠে!
রুপসা - একি! এতো ফুল দিয়ে ঘর সাজালো কে? আজ তো আমান আর রাইসার বাসর রাত। উদের রুম টা সাজানোর কথা ছিলো। ভুলে আবার আমাদের টা সাজিয়ে ফেলে নি তো! হায় কপাল!
আয়ান - ওদের রুম তো সাজানোই আছে।
রুপসা - তাহলে...
হটাৎ আয়ানের ফোনে ম্যাসেজ আসে। আয়ান ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে আমানের ম্যাসেজ....
"তোমাদের জন্য আমি আমার ভালোবাসা কে পেলাম। তাই তোমার আর ভাবির জন্য ছোট্ট সারপ্রাইজ!"
আয়ান - ওহহ এবার বুঝলাম। ফাজিল টার কাজ এসব!
রুপসা - কার? (অবাক হয়ে)
আয়ান - আমান এর।
রুপসা - এসব করার কি মানে ছিলো।
আয়ান - মানে টা না হয় আমিই বুঝিয়ে দিই। (চোখ মেরে)
রুপসা - মানে?
আয়ান - এমনিতেও তো আমাদের বিয়ের প্রথম রাত টা অনেক ঝগড়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলো তাই আজকের এই সারপ্রাইজ টা মন্দ না। কি বলো?
রুপসা - ঘুমিয়ে পড়ুন। আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে।
রুপসা আয়ানের কাছ থেকে চলে আসতে নিলেই আয়ান রুপসার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
আয়ান - এখনো রেগে আছো রুপ। আমি যা ভাবতাম সবটাই মিথ্যে ছিলো, ভুল ছিলো। সবাই কে এক মনে করাটা নিতান্তই বোকামি। না হলে কি আমার এমন ভালো বউ টাকে কষ্ট দিতাম বলো!
রুপসা আয়ানের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। অজান্তেই তার চোখের কোণে পানি চলে আসে।
আয়ান - কখন, কিভাবে, কেনো কিছুই জানিনা আমি শুধু জানি আমি #তোর_আসক্ত হয়ে গেছি। এক মূহুর্ত ও তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
রুপসা আয়ানের কথা শুনে ফুঁপিয়ে উঠে। আয়ান রুপসা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। রুপসা ও আয়ান কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
আয়ান - তুমি কি প্লান করেছো নাকি আজকের রাত টাও ঐ দিনের মতো বরবাদ করে দিবে?
রুপসা আয়ানের কথা শুনে চোখ মুছে আয়ানের দিকে তাকায়।
রুপসা - আমি বরবাদ করেছি নাকি। আপনিই তো করেছিলেন।
আয়ান - তো আমি যখন করেছি আজ তাহলে পূরণ করে দিই কি বলো?(চোখ মেরে)
রুপসা আয়ানের কথা শুনে লজ্জায় আয়ানের দিকে তাকাতে পারে না। মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।
এদিকে...
রুমে কারো আসার শব্দ শুনে রাইসা একটু ভয় পেয়ে যায়। মাথাটা হালকা তুলে আড়চোখে দেখে আমান এসেছে।
আমান রাইসার কাছে এসে বসে...
আমান - তো মিস ঝগরাটে সালাম করবে না আমায়? (মুচকি হেসে)
রাইসা আমানের কথা শুনে ঘোমটা ফেলে আমানের দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকায়।
রাইসা - আমি ঝগরাটে তাই না?
আমান - এ মা! তোমার দেখি লজ্জা ও নেই! মেয়েরা তো ঘোমটা তুলে না লজ্জায়৷ তখন বর এসে ঘোমটা টা তুলে মুখ দেখে। আর তুমি নিজেই ঘোমটা তুলে ফেললে!
আমি ভেবেছিলাম আমিও আমার বউ এর ঘোমটা তুলে তার মুখ টা দেখবো। তা আর হলো না! (অসহায় ভাবে)
আমানের কথা শুনে রাইসা আরও রেগে যায়। আমান কে ধাক্কা মেরে সরিয়ে উঠে চলে যেতে নিলেই আমান রাইসার হাত ধরে টেনে বিছানায় ফেলে দেয়। তারপর নিজেও দু'হাতে ভর করে রাইসার দিকে ঝুঁকে পড়ে।
আমান - এতো সহজে তো পালাতে পারবে না ঝগরাটে বউ। (মুচকি হেসে)
রাইসা - সরুন তো। আমি ঝগরাটে তাইনা। ওকে বেশ! আমি চলে যা....
আর কিছু বলার আগেই আমান রাইসার ঠোঁটে ঠোঁট ছুইয়ে দেয়।
আমান - ঝগরাটে বলেই তো তোমার প্রেমে পড়লাম! (চোখ মেরে)
আমানের কথা শুনে রাইসার রাগ হাওয়া হয়ে যায়। সাথেই সাথেই হেঁসে দেয় রাইসা।
সমাপ্ত
সকল পর্ব এর তালিকা ঃ
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০১
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০২
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৩
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৪
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৫
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৬
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৭
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৮
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ০৯
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ১০
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ১১
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ১২
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ১৩
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ১৪
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ ১৫
- বাংলা ভালোবাসার গল্প 💛 তোর আসক্ত 💛 পর্বঃ শেষ
আমার বাংলা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url